জীব বৈচিত্র্য সুরক্ষা :-জীবন বাঁচাতে এবং সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য জীববৈচিত্র সুরক্ষার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
আমাদের উক্ত পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনারা- জীববৈচিত্র সুরক্ষা, জীববৈচিত্র সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা, জীববৈচিত্রের ঝুঁকি ও প্রতিকার ইত্যাদি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য ও গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পরিবেশের একটি অন্যতম উপাদান হলো জীববৈচিত্র্য। জীববৈচিত্র্য মানুষ, উদ্ভিদ, প্রাণী সকলকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আলাদা আলাদা করা হয়েছে।
এজন্য জীবজগৎ কে সুন্দর একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশ উপহার দেয়ার ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষার গুরুত্ব তাৎপর্য অপরিসীম। পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা প্রয়োজনীয়তা ঝুঁকি ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা উল্লেখযোগ্য।
জীব বৈচিত্র্য সুরক্ষা
মানুষের সবুজ পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এজন্য জীবজগতকে প্রকৃতির সুরক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
জনসংখ্যার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতিসংঘে ২৭ তম সাধারণ অধিবেশনে প্রতিবছরের ৫ জুন বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এভাবে প্রতি বছর বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে জীবজগতকে সুরক্ষা করা যায়। তাছাড়া 1974 সালের দৈত্যের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর ক্রমবর্ধমান হারে ভেজোলা চাপ কে কমিয়ে পৃথিবীকে বসবাসের উপযোগী রাখার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালনে মানুষকে উৎসাহিত করতে প্রতিবছর বছর পরিবেশ দিবস পালন করা হয়ে থাকে।
পরবর্তী সময়ে (আইপিবিইএস)ইন্টার গভর্মেন্টাল সায়েন্স-পলিসি প্লাটফর্ম অন বায়োডাইভার্সিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস প্রতিবেদন অনুযায়ী কয়েক দশক ধরে প্রায় এক মিলিয়ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
তার ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের মত এবারেও ২০২৪ এর মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে জীববৈচিত্র কে। উক্ত দিবসকে কার্যকরী করার জন্য এবং ক্রমবর্ধমান হারে জীবজগতের বিলুপ্তি ও প্রাকৃতিক পরিবেশকে অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর জন্য বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন উদ্যোগের আহ্বান জানানো হয়েছে।
পরে জীববৈচিত্র্য মানব উন্নয়নের জন্য এবং পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চারও টিকে থাকার যে সকল প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে সেগুলো সরবরাহ করে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
এছাড়াও বর্তমান সময়ে মানুষ সৃষ্ট বিভিন্ন দাবানল উপযোগী একের পর এক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানছে এবং বন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে এগিয়ে যাচ্ছি।
ফলে বিশ্বব্যাপী এ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং Covid-19 সহ বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসজনিত মহামারীর পাদুর্ভাব থেকে অসংখ্য মানুষ ও পরিবেশকে হুমকির মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে বিশ্বব্যাপী সকলের ও পরিবেশের অন্যতম প্রতিপাদ্য বিষয় হলো জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা
জীববৈচিত্র সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য। কেননা একটি জীববৈচিত্র্য অথবা সুন্দর পৃথিবীর সংরক্ষণের জন্য এবং মানুষের বসবাস উপযোগী করে তোলার জন্য প্রতিটি জীবের বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মানুষসহ অন্যান্য জীব ও অসংখ্য উদ্ভিদের সমন্বয়ে পৃথিবী সুন্দর ও সম্ভাবনাময় সৌন্দর্যে এগিয়ে চলে। এভাবে মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনে জীববৈচিত্রের টিকে থাকা অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর শুভাকাঙ্ক্ষী স্বরূপ।
বিভিন্ন গোষ্টি বা প্রাণী গোষ্ঠীর স্বনির্ভর নয়, তবে জীবন ধারণের তাগিদে ও বিভিন্ন প্রাণী একে অপর প্রাণী গোষ্ঠীর ওপর নির্ভর করতে হয় প্রতিনিয়ত হারে।
এক্ষেত্রে যে স্থানে জীববৈচিত্র্য যত বেশি রয়েছে সেখানকার প্রাণী গোষ্ঠীর জীবন দারুন তত বেশি সহজ হয়।। ফলে জীববৈচিত্র্য কে সংরক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
এর ধারাবাহিকতায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে টিকিয়ে রাখা, গতিশীল বিবর্তন বা ইকো সিস্টেম, জেনেটিক জার্মপ্লাজম রক্ষা করা এবং সুস্থ পরিবেশের জন্য জীববৈচিত্র সংরক্ষণ খুবই প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে পুষ্টি নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক খাদ্যের প্রধান উৎস হল জীববৈচিত্র্য। বর্তমান সময় থেকে প্রায় ১২ বছর আগে কৃষিকাজ শুরুর পর থেকে প্রায় কয়েক হাজার প্রাণী এবং 7000 উদ্ভিদের ওপর তাদের খাদ্যের নির্ভরশীলতা রয়েছে। তবে বর্তমান সময় পর্যন্ত ২০ হাজার উদ্ভিদ রোজা থেকে মানুষ বিভিন্ন প্রথাগত ও আধুনিক চিকিৎসা ব্যবহার করছে।
এক্ষেত্রে বিলুপ্ত হয়ে গেলে বিভিন্ন জীববৈচিত্র্য তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের বিনষ্ট এবং পরিবেশের এক বিরাট বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়।
এই জন্য বনে জঙ্গলে ও ফসলি যে সকল উদ্ভিদ রয়েছে সেগুলোর নিকট সম্পর্কিত এমন সকল উদ্ভিদ ও প্রাণীর যথাযথভাবে রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং উপকারী প্রয়োজনীয় যে সকল জিন সমৃদ্ধ হয়েছে তাদের সমৃদ্ধি সাধন করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য।
জীববৈচিত্র্যের ঝুঁকি ও প্রতিকার
বর্তমানে (IUCN)ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার এর তত্ত্বাবধান অনুসারে, বাংলাদেশের প্রায় ২৩ টি প্রজাতি রয়েছে যে সকল বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব প্রায় হুমকির সম্মূখে।
ফলে দেশের প্রায় ২৯ টি বর্ণ প্রজাতির অস্তিত্ব ক্রমান্বয়ে বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ঔষধ ও পরিবেশ বস্ত্রের উপাদান জোগাড় করার কারণে এবং মানুষের বাসস্থান তৈরির জন্য জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রায় ১২৫টি বৃক্ষ প্রজাতি রয়েছে যা বর্তমান সময়ে বিপন্ন। মানবজাতির সকল প্রাকৃতিক সম্পদ ও অন্যান্য বিষয় যেমন বনাঞ্চল উজার, সমুদ্র, জলাশয় ইত্যাদি নিজেদের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহার করে নষ্ট করছে।
ফলে সুন্দরবনের ভাওয়ালের গড় সহ মধুপুর সুন্দরবন এবং বিভিন্ন বনভূমিতে বিদ্যমান থাকা বিভিন্ন প্রাণীর যেমন: মিঠা পানির কুমির, বনমহিস, রাজশকুন, বনো হাঁস, অজগর, সরীসৃপ হরিণ, চিত্রা হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ইত্যাদি বিলুপ্ত হতে চলেছে, এবং তাদের জীবনদারা হুমকির সম্মুখীন।
এ সকল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে মানুষকে উৎসাহিত হতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সেখানকার অধিবাসী উদ্ভিদ এবং বনভূমির জন্য তা সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সকল মানুষকে উদ্যোগী হতে হবে।
পাশাপাশি সরকার কর্তৃক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে এ বিষয়ে সকলকে উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে যথেষ্ট জোড়ালো ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
সময়ের সাথে সাথে জীববৈচিত্র্য এবং জীবগুলো যেন বিলুপ্ত হয়ে না যায় সে ক্ষেত্রে তাদের জীববৈচিত্রের সাথে তাল মিলিয়ে চলে থাকা বা ক্রমান্বয়ে প্রকৃতিকে সুন্দরতম বৈচিত্র্য উপহার বা রক্ষা করার ক্ষেত্রে মানুষকে সহযোগিতা করতে হবে এছাড়াও সুন্দর পৃথিবী, সমৃদ্ধ ও বোর্ডিং করে তোলার জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষা পৃথিবীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করি আমাদের পোস্টে পড়ার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্যের প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব এবং জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা সম্পর্কিত যে সকল তথ্য জানতে চান অথবা জানতে চেয়েছেন তা যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন।