অনলাইন ইনকামতথ্যতথ্যপ্রযুক্তিবিজ্ঞানসাধারণ জ্ঞান

আইসল্যান্ডের লাইট হাউস ভ্রমণ: সম্পূর্ণ বাংলা গাইড

আইসল্যান্ডের লাইটহাউস: রহস্য, সৌন্দর্য ও ভয়ংকর অভিজ্ঞতা

আইসল্যান্ডের লাইটহাউসগুলো শুধুমাত্র নাবিকদের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য নয়, বরং ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলী, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং রহস্যে মোড়া অভিজ্ঞতার জন্যও সুপরিচিত। এদের মধ্যে অনেকগুলোই একদিকে যেমন পর্যটকদের আকর্ষণ করে, অন্যদিকে আবার অনেকের জন্য ভীতিকর স্থানও বটে। আজ আমরা জানবো সেইসব রহস্যময় আইসল্যান্ডের লাইটহাউসের গোপন তথ্য।আইসল্যান্ড লাইট হাউস[ez-toc]

  • আইসল্যান্ড লাইট হাউস

রহস্যময় লাইটহাউসের গল্প

আইসল্যান্ডের একটি নির্দিষ্ট লাইটহাউস সমুদ্রের মাঝে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি পাথরের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এর সাথে একটি ছোট ঘর এবং তার পাশে ছোট্ট একটি লাইট। এই লাইটটি সারাক্ষণ চালু রাখার জন্য প্রতি তিন বছর পর পর এক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়, যার একমাত্র কাজ হলো নিশ্চিত করা যে লাইটটি কখনো বন্ধ না হয়। তবে এ চাকরির আরেকটি ভয়ংকর দিক হলো, এখানে কোনো ইন্টারনেট বা যোগাযোগের মাধ্যম নেই। সাম্প্রতিককালে আজারবাইজানের এক মেয়েকে এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সাত দিন পর তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। গত দশ বছরে মাত্র তিনজন এই চাকরি শেষ করে সফলভাবে ফিরে এসেছে, এবং তারা সবাই বাংলাদেশী। সবশেষ ১০ বছরে ৪৭০ জন এখানে মৃত্যুবরণ করেছে এবং ফিরে আসতে পারেনি।

অদ্ভুত নিয়মাবলি ও দায়িত্ব

এই লাইটহাউসের তিন মাসের চাকরির জন্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হয়। এর একমাত্র দায়িত্ব হলো, লাইটটি যেন কখনো বন্ধ না হয়। কারণ, এই লাইটটি সেই অঞ্চলে নাবিকদের দিক নির্দেশনা দেয়, যা একটি পাথুরে এলাকায় জাহাজ বা স্টিমার চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অদ্ভুতভাবে, যারা এখানে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি; বলা হয় যে তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে মারা গিয়েছিল। এখানে যারা সফলভাবে ফিরে এসেছেন, তাদের মধ্যে একজন সাকিব ওয়াইসি বলেন যে, আটবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও তিনি আল্লাহর কৃপায় ফিরে আসতে পেরেছিলেন।

লাইট হাউজের চাকরির আবেদন

যদি আপনি এই লাইটহাউসে চাকরি করতে চান, তাহলে ইউরোপের যেকোনো দেশ থেকে আবেদন করতে পারেন। তবে আপনার মানসিক শক্তি এবং সাহস থাকতে হবে। এখানে কাজ করতে চাইলে আপনার হৃদরোগ, মানসিক অবসাদ বা অন্য কোনো মনস্তাত্ত্বিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়া উচিত নয়। এই লাইটহাউসে চাকরির জন্য সাহসী মনোবল ও মানসিক স্থিতিশীলতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

আইসল্যান্ডে ভ্রমণের জন্য বিখ্যাত কিছু লাইটহাউস

আইসল্যান্ডে কিছু লাইটহাউস দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয়:

1. ডিরহোলাই লাইটহাউস: এটি আইসল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত। ১৯১০ সালে নির্মাণ এবং ১৯২৭ সালে সংস্কারকৃত এই লাইটহাউসটি প্রায় ৩১ মাইল দূর পর্যন্ত, আলোর সংকেত পাঠাতে সক্ষম। এর শীর্ষে একটি লাল লণ্ঠনঘর রয়েছে এবং এটি পর্যটকদের জন্য একটি দর্শনীয় স্থান।

2. রেইকিয়ানেসভিটি: আইসল্যান্ডের প্রথম লাইটহাউস হিসেবে পরিচিত এটি। ১৮৭৮ সালে নির্মিত, কংক্রিট দিয়ে তৈরি এই লাইটহাউসটি প্রায় ২৫ মাইল দূর থেকে দৃশ্যমান। এর আলো প্রতি ৩০ সেকেন্ডে দুইবার ফ্ল্যাশ করে।

3. ক্নারারোস লাইটহাউস: আধুনিক ও আর্ট নুভো স্থাপত্যের মিশ্রণে তৈরি এই লাইটহাউসটি ১৯৩৯ সালে নির্মিত। এটি প্রতি ৩০ সেকেন্ডে তিন-সেকেন্ডের সাদা ফ্ল্যাশ নির্গত করে এবং ২৬ মিটার উঁচু।

প্রতিটি লাইটহাউসের নিজস্ব ইতিহাস এবং সৌন্দর্য রয়েছে, যা আইসল্যান্ডের বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মিলে পর্যটকদের কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে।

আইসল্যান্ডের লাইট হাউসগুলি ভ্রমণ করতে হলে আপনি বিভিন্ন ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ কিছু আকর্ষণীয় স্থানে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে, Reykjanesviti, Dyrhólaeyjarviti, এবং Bjargtangar এর মতো লাইটহাউসগুলি বিশেষভাবে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। এইসব লাইটহাউসের আর্কিটেকচার এবং এর চারপাশের দৃশ্য অত্যন্ত চমৎকার।

বিস্তারিত ভ্রমণ গাইড এবং আইসল্যান্ডের লাইটহাউসগুলো সম্পর্কে জানার জন্য আপনি এই লিংকগুলো দেখতে পারেন:

বিস্তারিত জানোনা আইসল্যান্ড ইউকিপিডিয়া

আইসল্যান্ডের এই রহস্যময় এবং মনোমুগ্ধকর লাইটহাউসগুলোর বিষয়ে ভবিষ্য

আইসল্যান্ডে লাইট হাউস নির্মাণের জন্য খরচ ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে, তবে একটি উদাহরণ হিসেবে, ২০১৯ সালে রেইকজাভিকের Höfði লাইট হাউসটি তৈরি করতে খরচ হয়েছিল প্রায় ISK ১৫০,০০,০০০ (আইসল্যান্ডিক ক্রোনা), যা প্রায় ১,০০০,০০০ মার্কিন ডলার। এই পরিমাণ টাকা যখন বাংলাদেশী টাকায় রূপান্তর করা হয়, তা প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা (১,০৫,০০,০০০ টাকা) হবে, যেখানে এক মার্কিন ডলার = ১০৫ টাকা হিসাবে গণনা করা হয়েছে।

এই খরচের মধ্যে ছিল ফাউন্ডেশন এবং সাইট এক্সটেনশন, যা বেশি কাজের দাবি করেছিল

খরচের বিষয় বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুনএখানে ক্লিক করুন

আইসল্যান্ড লাইট হাউস

তে আরও প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।

[it-toc]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button